সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ০৩:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
উপকারভোগীদের কৃষি উপকরণ বিতরণ করলেন এনজিও সংস্থা “মুক্তি “ পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিবন্ধীকে ব্যাপক মারধরের অভিযোগ! দেশে ৪ কোটি মানুষের চলছে দুর্দিন,ঋণ করেই চলছে ৭৪ভাগ পরিবার কোস্টগার্ডের ধাওয়ায় ৭ লাখ ইয়াবা পানিতে ফেলে পালাল পাচারকারীরা ‘ইশ্-মার্ট বাংলাদেশ’ প্রভাষক শাহীন সরওয়ার টানটান উত্তেজনায় শেষ হল শেখ রাসেল গোল্ডকাপ;বিজয়ীদের পুরষ্কার তুলে দেন অতিথিগণ টেকনাফে মুক্তি কক্সবাজার কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রকল্পের উপকারভোগীদের মধ্যে প্রশিক্ষণ পরবর্তী নগদ অর্থ সহায়তা বিতরণ টেকনাফে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন অভাবনীয় সফলতায় মেম্বার এনামের প্রতিষ্ঠিত বালিকা মাদ্রাসা টেকনাফে “অক্সফাম” কর্তৃক ভাউচার প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ

অপার সম্ভাবনার পর্যটন খাত; ধ্বংস হচ্ছে কতিপয় দালাল চক্রের হাতে |বাংলাদেশ দিগন্ত

শামশুল আলম শ্রাবণ:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২০
  • ৫৫৯ বার পঠিত

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত আর পাহাড়ের সন্নিবেশিত মনোরম পরিবেশ গড়ে তুলেছে অপার সম্ভাবনার বিশ্ব পর্যটনের তীর্থস্থান হিসেবে আমাদের এই কক্সবাজারকে। বিশ্বের অসংখ্য মানুষ প্রিয় জন্মভুমি বাংলাদেশকে না চিনলে ও কক্সবাজারকে চিনে অবাক দৃষ্টিতে। বাংলাদশের এই সর্বদক্ষিণের জেলাকে পর্যটনের রাজধানী হিসেবে আজকের এই পর্যায়ে নিয়ে আসার পেছনে রয়েছে স্থানীয় মানুষের কঠিন পরিশ্রম আর বিগত ও বর্তমান সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত সমুহ। প্রতি বছর লাখো লাখো দেশি বিদেশি পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয় সৃষ্টিকর্তার নিজ হাতে গড়া প্রাকৃতিক এই লীলাভূমিটি। ভ্রমণ পিপাসু মানুষের তিল তিল করে জমানো অর্থ এখানে এসেই বিলিয়ে দিচ্ছে প্রাকৃতিক এই সৌন্দর্যের কাছে নত হয়ে। দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের সারা জীবনের স্বপ্ন থাকে সৈকতের ঢেউ আর পাহাড়ের সবুজের মিতালী দেখার।এই পর্যটন খাতকেই এখানকার স্থানীয় জনগণ আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে ধরে নিয়েছে যুগ যুগ ধরে।জীবন ও জীবিকার তাগিদে দেশের অন্যন্য অঞ্চল হতেও হাজারো মানুষ ছুটে আসে কর্মসংস্থানের আশায়। কাউকেই বিমুখ করেনি এই বিশাল পর্যটন খাত। দেশি বিদেশি বিনিয়োগের ফলে গড়ে তোলা হয়েছে উন্নত হোটেল মোটেল জোন। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে গড়ে তোলা হয়েছে আলাদা পুলিশ জোন। এই নগরীকে আরো সমাদৃত করতে নতুন সংযোজন করা হয়েছে উন্নয়ন কতৃপক্ষ।সুদীর্ঘ সমুদ্র সৈকত এর পাশ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে মেরিন ড্রাইভ নামক দৃষ্টিনন্দন একটি সড়ক।একটি আধুনিক ও উন্নত পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তোলতে যা যা প্রয়োজন সব কিছু যুক্ত করা হয়েছে এখানে। তবুও ফিরতি পথে হতাশ হচ্ছে পর্যটকরা। কেন হচ্ছে সেদিকে নজর দেওয়ার মানুষ আর কতৃপক্ষ কেউই নেই। গুটিকয়েক দালালের কারনেই মুলত সকল পর্যটকদের এই হতাশা, মনক্ষুন্নতা, পরবর্তী আসার জন্য নিরুৎসাহিত হওয়ার প্রধান ও একমাত্র কারন। এমন কোন পর্যটক নাই যারা দালালের খপ্পরে পড়েনি বা পড়ছেনা।দুরপাল্লার বাস থেকে নেমেই প্রত্যেকটা পর্যটকের প্রয়োজন হয় সি এন জি বা টমটম বা রিক্সার।এগুলোর চালক হিসেবে রয়েছে স্থানীয়, রোহিঙ্গা ও অন্যান্য জেলার লোকজন। মুলত এরাই হচ্চে প্রকৃত দালাল। এই যানবাহন গুলোর ড্রাইভারদের নিয়ন্ত্রণ করে কয়েকজন স্থানীয় মানুষ। এই কয়েকজনের সাথে কন্টাক্ট থাকে হোটেল মোটেল এর ম্যানেজমেন্ট এর সাথে। পর্যটন খাতকে বিস্তৃত করতে এখানে দেশি বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল হোটেল মোটেল জোন। বর্তমানে ডায়বেটিস পয়েন্ট থেকে ইনানী পর্যন্ত এলাকায় ছয়শত এর অধিক আবাসিক হোটেল মোটেল রয়েছে। আবার বেশিরভাগ হোটেল মোটেলে একাধিক ম্যানেজমেন্ট ও রয়েছে। হোটেল মোটেল গুলোর প্রতিযোগিতা মূলক বাজারে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন আবাসিক হোটেল মোটেল কতৃপক্ষ মোড়ে মোড়ে তাদের নিজস্ব লোক নিয়োগ করে।এরাই মুলত বিভিন্ন যানবাহনের ড্রাইভারদের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। দুরপাল্লার বাস হতে নেমে পর্যটকরা সিএনজি বা টমটম বা রিক্সাতে করে হোটেল মোটেল এ প্রবেশ করেন। এখন পর্যটকরা যেই হোটেলেই রুম ভাড়া করুক হোটেল মোটেল কতৃপক্ষ গাড়ির ড্রাইভারকে রুম ভাড়ার সমান অর্ধেক টাকা অবশ্যই দিয়ে দিতে বাধ্য।যতদিন থাকবে ততদিন এর সমান অর্ধেক টাকা গাড়ির ড্রাইভার পেয়ে যায়। যেমন একজন পর্যটক একটা হোটেলে রুম ভাড়া নিলো একরুম ৩ হাজার করে তিনদিনের জন্য ৯ হাজার টাকায়। এই ৯ হাজারে হোটেল মোটেল কতৃপক্ষ পাবে সাড়ে ৪ হাজার আর পর্যটকটি যে গাড়ি নিয়ে এসেছে ঐ গাড়ির ড্রাইভার পাবে সাড়ে ৪ হাজার। গাড়ির ড্রাইভার ও কতৃপক্ষ এর সাথে অলিখিত চুক্তি থাকে এরকমই। ফলে প্রতিটা পর্যটক প্রতারিত হচ্ছে এদের কাছে। হোটেল মোটেল কতৃপক্ষ ও রুমের উচিত মূল্যের ছেয়ে অধিক ভাড়া হাতিয়ে নিচ্ছে ড্রাইভারদের কমিশন দিতে হয় বিধায়।মাঝখানে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে আগত পর্যটকরা। একজন পর্যটক ৫ দিনের সফরে এলে ও আর্থিক সংকটে পড়ে তাকে ৩ দিনের মাঝে ফেরত যেতে হচ্ছে। আবাসিক হোটেল মোটেল জোনের কর্মচারীদের সাথে আবার রেস্টুরেন্ট মালিকদের সাথে অলিখিত চুক্তি থাকে রেস্টুরেন্ট এ কাস্টমার দিলে প্রতি বেলা খাবার হিসেবে জন প্রতি কমিশন পায় তারা। এভাবে রেস্টুরেন্ট কতৃপক্ষ ও খাবার মুল্যের অধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পর্যটক হতে কমিশনের অজুহাতে। এভাবে প্রতিটি পর্যায়ে দালালের কারনে অধিক অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে বিধায় পরবর্তীতে আসতে আগ্রহ হারাচ্ছে তারা। কেননা যে টাকা দিয়ে ঢাকার একজন পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণ করছে একই পরিমান টাকা দিয়ে সে পর্যটকটি থাইল্যান্ড, ভারত, নেপাল বা মালদ্বীপ ভ্রমন করতে পারছে। এভবেই গুটি কয়েক দালালের কারণে অপার সম্ভাবনার পর্যটনের এই খাত হতে পর্যটক হারাচ্ছে প্রতিবছর। প্রশাসন, পর্যটন কতৃপক্ষ, হোটেল মোটেল এ বিনিয়োগ দাতাগণ যদি এই দিকে সূক্ষ্ম নজর না রাখে আগামীতে এই কক্সবাজার পর্যটন শুন্য হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By Bangla Webs
error: Content is protected !!