প্রচন্ড তাপদাহ ও গরমের মাঝে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে উখিয়া-টেকনাফ বাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সকল চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে বহাল তবিয়তে পল্লী বিদ্যুতের পুরনো চিত্র। কারিগরি ত্রুটির অজুহাতে দিনে প্রায় প্রতিদিন ৫/৬ ঘন্টা লোডশেডিং দিয়ে বাড়তি সুবিধা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাংক-বীমা, বিপনী বিতাণ ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা কেন্দ্রসহ প্রত্যন্ত পল্লী গ্রামের সাধারণ মানুষ বিদ্যুতের অব্যাহত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেইসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে গালি দিচ্ছে। বিশেষ করে দিনের বেলায় ৪/৫ বার লোডশেডিং রাতে ও একি অবস্থা।
কোন কারণ ছাড়াই বিদ্যুতের ঘন ঘন এমন যাওয়া-আসার ভেলকিবাজিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জনসাধারণের সুবিধার কথা চিন্তা করে পল্লী বিদ্যুতের এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন পর্যায় থেকে বার বার তাগাদা দেয়া সত্বেও কোন কাজ হচ্ছে না। শুরুর দিকের সেই পুরনো কারিগরি সহায়তায় চলছে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ। মাঝে-মধ্যে সঞ্চালন লাইন মেরামত হচ্ছে বলে মোবাইলে কথা ও বলে না কোন ধরনের মাইকিং ছাড়া এই ধরনের লোডশেডিং অতিষ্ঠ জনজীবন প্রচন্ড তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষ অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে সেখানে সঠিকভাবে বিদ্যুৎ পাচ্ছে না এমনিতেই লক ডাউন থেকে ভৌতিক বিল নিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই। কাজের নাম করে দিনব্যাপী বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখছে। চাহিদা মাফিক বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও স্থানীয় অফিস রহস্যজনক কারণে লোডশেডিংয়ের কথা বলে ঘন্টার পর ঘন্টা বন্ধ রাখছে।
সম্প্রতি উপজেলা ব্যাপী সঞ্চালন লাইনের আশপাশ থেকে ব্যাপক ভাবে সাধারণ মানুষের কোটি কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-পালা কেটে ফেলা হয়েছে। সুবিধাভোগী মানুষের আশা ছিল গাছ কাটার ফলে হয়তো বিদ্যুৎ সরবরাহের উন্নতি হবে। কিন্তু যথায়তথা, কোন কাজ হয়নি। সাধারণ মানুষের প্রতি পল্লী বিদ্যুতের লোকজনের নুন্নতম দায়িত্ববোধ নেই বললেই চলে। পল্লী বিদ্যুতের কর্মকতা-কর্মচারীদের মনগড়া আচরণ ও আইনের মারপ্যাঁচ দেখিয়ে দিন দিন তাদের দৌরাত্ব বাড়ছেই। ফলে ছোট বড় পোল্ট্রি ও ডেইরী খামার, ওয়ার্কশপ, টমটম গ্যারেজ এবং বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট নানামূখি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকায় শ্রমিকরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।
অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে বিদ্যুৎ চালিত অনেক জিনিস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অসহ্য গরম ও সীমাহীন লোডশেডিংয়ের কারণে স্বস্তি মিলছে না কোথাও। এছাড়াও দিনের পর দিন বিদ্যুৎ লাইনের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান না হওয়া, মিটারসংক্রান্ত জটিলতা ও বিলসংক্রান্ত সমস্যার বিষয়ে গ্রাহক হয়রানি এখন চরমপর্যায়ে পৌঁছেছে। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের লোকজন অসহনীয় গরমে নির্ঘুম রাত পোহাচ্ছে। বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে মধ্যরাতেও ভেসে আসছে অবুঝ শিশুদের আর্তচিৎকার। বয়োবৃদ্ধ ও অসুস্থ লোকজন অসহ্য গরমে অসহায় হয়ে পড়েছে। পিক আওয়ার না হয় মেনে নেয়া যায়, কিন্তু মধ্যরাতের অফপিক আওয়ারে বিদ্যুতের লোডশেডিং কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আকাশে মেঘ বা হালকা ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাসে কর্তৃপক্ষ দ্রুত বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিচ্ছে। এরূপ পরিস্থিতিতে হালকা বৃষ্টিপাতের পরে ভ্যাপসা গরমে জনমনে নাভিস্বাস পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
দেশে আসা অনেক প্রবাসীরা জানান, তারা দেশে এসে এমনিতেই করোনার কারণে যেতে পারছেনা একটু শান্তিতে ঘরে ও থাকা যাচ্ছে না কিন্তু এখানে আসার পর তাদের অশান্তিটা যেন আরো বেড়ে গেছে। দেশে এসে লোডশেডিংয়ের কারণে পরিবার পরিজনদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।
উপজেলার সর্বত্র পল্লী বিদ্যুতের নানা অপকর্ম ও কারসাজির বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ফেইসবুকে বিভিন্ন জনের মন্তব্য তুলে ধরা হয়নি পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী লিখেছেন মনে হয় পল্লী বিদ্যুৎ কোম্পানি গুলো দুনিয়াতে আজাব হলেও আখেরাতে পুরস্কৃত হবে মানুষের গাইলের কারণে এতো গালি শুনেও কেমনে।
সরকারের উচ্চপর্যায়ের সর্বক্ষেত্রে শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিতের ঘোষনার বাস্তবায়ন ঘটানোর প্রচেষ্টা যেন অব্যাহত থাকে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য সর্বক্ষেত্রে সবসময় বিদ্যুৎ থাকা খুবই জরুরী। তাই এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে আরো বেশী সচেষ্ট হওয়াও জরুরী।
এব্যাপারে উখিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির-উখিয়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) মোবাইলে কল দিয়ে রিসিভ হয়নি