সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ০৫:২৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
উপকারভোগীদের কৃষি উপকরণ বিতরণ করলেন এনজিও সংস্থা “মুক্তি “ পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিবন্ধীকে ব্যাপক মারধরের অভিযোগ! দেশে ৪ কোটি মানুষের চলছে দুর্দিন,ঋণ করেই চলছে ৭৪ভাগ পরিবার কোস্টগার্ডের ধাওয়ায় ৭ লাখ ইয়াবা পানিতে ফেলে পালাল পাচারকারীরা ‘ইশ্-মার্ট বাংলাদেশ’ প্রভাষক শাহীন সরওয়ার টানটান উত্তেজনায় শেষ হল শেখ রাসেল গোল্ডকাপ;বিজয়ীদের পুরষ্কার তুলে দেন অতিথিগণ টেকনাফে মুক্তি কক্সবাজার কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রকল্পের উপকারভোগীদের মধ্যে প্রশিক্ষণ পরবর্তী নগদ অর্থ সহায়তা বিতরণ টেকনাফে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন অভাবনীয় সফলতায় মেম্বার এনামের প্রতিষ্ঠিত বালিকা মাদ্রাসা টেকনাফে “অক্সফাম” কর্তৃক ভাউচার প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ

চট্টগ্রামে পুলিশের বিরুদ্ধে ‘মাদকসেবীর’ মামলার নেপথ্য |বাংলাদেশ দিগন্ত

বিশেষ প্রতিবেদক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০২০
  • ৪৯৭ বার পঠিত

নগরের বায়েজিদ এলাকার এক ‘ব্যবসায়ীকে’ বাড়ি থেকে ধরে এনে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় ও ২৫ পিস ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়ার অভিযোগ তুলে বায়েজিদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সহিদুল ইসলামসহ আট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে দায়ের হয়েছিল মামলা।

১৯ আগস্ট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মহিউদ্দীন মুরাদের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন মো. আবদুল ওয়াহেদ নামে এক ব্যক্তি।

মামলা নম্বর ২৯৩/২০। মামলায় বায়েজিদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সহিদুল ইসলামসহ আট পুলিশ সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলার বাদি মো. আবদুল ওয়াহেদ নিজেকে ব্যবসায়ী দাবি করে এজাহারে উল্লেখ করেছিলেন, ১৩ জুলাই রাতে বায়েজিদ থানাধীন মুরাদনগর জামাল কলোনী এলাকায় পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রির বিষয়ে কথা বলার সময় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে বাদিকে থানায় ধরে নিয়ে যান। বাদির সঙ্গে থাকা আরও তিনজনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়।

মো. আবদুল ওয়াহেদের এ মামলার সূত্র ধরে অনুসন্ধান চালিয়েছে। টানা কয়েকদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে জানার চেষ্টা করেছে ১৩ তারিখ রাতে আসলে কী হয়েছিল। কথা বলেছে প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার সাক্ষীর সঙ্গে। এছাড়া কথা বলা হয়েছে বায়েজিদের আরেফিন নগর এলাকার যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে সেখানকার বাড়ির মালিক ও কেয়ারটেকারের সঙ্গে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আবদুল ওয়াহেদ ও তার সঙ্গীদের ইয়াবা সেবনের বিষয়টি বাড়ির কেয়ারটেকার ও স্থানীয়রা পুলিশকে জানানোর পরেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের চারজনকে ইয়াবা সেবনরত অবস্থায় আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তাদের কাছ থেকে বেশকিছু ইয়াবাও উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় বায়েজিদ থানা পুলিশ হাতেনাতে ইয়াবাসহ আটক চার ইয়াবা সেবনকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে।

জামিন পেয়ে আবদুল ওয়াহেদ তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে দাবি করে আদালতে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি সিএমপির উপ-কমিশনারকে (উত্তর) তদন্তের দায়িত্ব দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় উঠে এসেছে আবদুল ওয়াহেদ, তার সহযোগী আবুল হোসেনসহ অন্যরা বায়েজিদের মুরাদনগর জামাল কলোনির বাসায় সেদিন কী করছিলেন।

জামাল কলোনির কেয়ারটেকার শ্যামল চন্দ্র দাশ বলেন, ১৩ তারিখ রাতে ১৫ নম্বর বাসায় অবস্থান করছিলেন চারজন। সেখান থেকে মাদক সেবনের গন্ধ পেয়ে পাশের রুমের ভাড়াটিয়া আমাকে অভিযোগ করেন। পরে আমরা গিয়েও তা দেখতে পাই।তাদেরকে বারণ করে আসি যাতে বাসায় বসে মাদক সেবন না করেন। কিন্তু তারা শুনছিলেন না। পরে আমি এলাকার দারোয়ানসহ মানুষজনকে খবর দিই। তারা এসেও সবাইকে বসে মাদক সেবন করতে দেখেন। ’

শ্যামল চন্দ্র দাশ বলেন, পরে থানার টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানালে পুলিশ এসে মাদক সেবনরত অবস্থায় তাদের আটক করেন।

একই বক্তব্য দেন ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া মোবারক হোসেন, মো. রুবেল, মো. কালু, আয়েশা বেগম, বেবি আক্তার, অমরী রাণী দাশসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা।

জামাল কলোনির দারোয়ান মো. শামসুল আলম প্রকাশ লালু মিয়া বলেন, আবুল হোসেন ইয়াবা খান সেটা সবাই জানেন। ইয়াবার টাকা জোগাড় করতে চুরিও করেন। পাশের এক ভাড়াটিয়ার মুরগিও চুরি করেছেন। এ নিয়ে তাকে সতর্ক করা হয়েছে কয়েকবার।

‘বাসা ভাড়া নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন মানুষজন নিয়ে এসে আড্ডা দিত আবুল হোসেন। প্রথম দিকে আত্মীয়-স্বজন মনে করলেও ঘটনার দিন বুঝতে পারি তারা আসলে মাদক সেবনের জন্যই আসে। মাদকের আসর বসানো হতো এতদিন। ’

দারোয়ান মো. শামসুল আলম প্রকাশ লালু মিয়া বলেন, আবুল হোসেনের নিজের বাড়ি বায়েজিদের সৈয়দনগর এলাকায়। ওখানে না থেকে নির্জন এলাকায় বাসা নেওয়ার বিষয়টি এখন বুঝতে পারছি।

জামাল কলোনির কেয়ারটেকার শ্যামল চন্দ্র দাশ বলেন, বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় আবুল হোসেনের জাতীয় পরিচয়পত্র চাইলে পরে দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি তা দেননি।

এদিকে মামলার বাদি আবদুল ওয়াহেদ নিজেকে আরেফিন নগর এলাকার ব্যবসায়ী দাবি করলেও সেখানে তার কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই বলে জানা গেছে। তিনি আরেফিন নগর এলাকার নজরুলের ভাড়াটিয়া বলে মামলায় উল্লেখ করলেও বাড়ির মালিক নজরুল জানান আবদুল ওয়াহেদ নামে তার কোনো ভাড়াটিয়া নেই।

জানা গেছে, আবদুল ওয়াহেদের বাড়ি নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানাধীন বদলকোট এলাকায়। তার বাবার নাম রফিকুল ইসলাম।

যে কারণে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

মাদক সেবনরত অবস্থায় আটকের পর থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশকে চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশ তাদের না ছেড়ে মামলা দায়ের করে। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বাদশা নামে এক ব্যক্তি আটক আবদুল ওয়াহেদ, আবুল হোসেন, মোহাম্মদ হোসেন ও মো. হানিফকে ছাড়িয়ে নিতে তদবির করেন। অভিযান পরিচালনাকারী টিমের সদস্যদেরকে চাপ দেন যাতে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের ছাড়া হয়নি।

বিষয়টি স্বীকার করেন অভিযান পরিচালনাকারী টিমের একজন সদস্য। তিনি বলেন, আবদুল ওয়াহেদসহ চারজনকে হাতেনাতে ইয়াবাসহ সেবনরত অবস্থায় আটকের পর যখন থানায় নিয়ে আসা হয় বাদশা নামে এক ব্যক্তি তাদের ছাড়িয়ে নিতে তদবির করেন। তাদের ছাড়াতে না পেরে এখন মিথ্যা অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেছে।

বায়েজিদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েই পুলিশ চার মাদকসেবীকে ইয়াবাসহ আটক করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তারা জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে দিল। শুধু হয়রানি করার জন্যই এ মামলা করা হয়েছে।

আবুল হোসেন, মোহাম্মদ হোসেন ও মো. হানিফের বিরুদ্ধে মাদক আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে জানা গেছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বলেন, ১৩ তারিখ পুলিশ যে মামলা দায়ের করেছিল সেটির সত্যতা আমরা পেয়েছি। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আবদুল ওয়াহেদ ও অন্যরা মাদক সেবনের বিষয়টি জানিয়ে যারা থানায় ফোন করেছে তাদের সঙ্গেও কথা বলেছি। কিন্তু তারা কারাগার থেকে বের হয়ে কেন পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করলো তা তদন

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By Bangla Webs
error: Content is protected !!