কক্সবাজারের প্রাণকেন্দ্র
বাঁকখালী নদী দিন দিন গিলে খাচ্ছে অবৈধ দখলদাররা। কিছু চিহ্নিত
ভূমিদস্যুদের পরিকল্পিত দখলের ফলে বাকখালী নদী গতিপথ এখন প্রতিনিয়ত
সংকুচিত হয়ে আসছে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অবৈধ দখল অব্যাহত রাখায় অস্তিত্ব
সঙ্কটে পড়েছে । সরকারী খাস জমি,বন্দোবস্তি জমি,ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি
জবর দখল যেন থেমে নেই। ভুমিদস্যুদের করালগ্রাস থেকে কোন ভাবেই থামানো
যাচ্ছেনা বাকখালী খাল। বাখখালী গিলে খাওয়া এক ভুমি দস্যুর নাম ফরিদুল হক
নান্নু।
জানা যায়, কক্সবাজার পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের আওতাধীন টেকপাড়া এলাকায়
আবু সাঈদ কোম্পানির বরফ কলের পশ্চিমপাশে ১০ বিঘার চেয়ে বেশি অবৈধ স্থাপনা
করে গড়ে তুলেছে রমরমা অবৈধ বানিজ্য। টেকপাড়ায় এলাকার বাসিন্দা নুরুল হক
কোম্পানির ছেলে ফরিদুল হক নান্নুর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা ও
জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা বিক্রির মাধ্যমে অর্জন
করেছে বিশাল অঙ্কের টাকা, সেই সাথে গড়ে তুলেছে তেলের পাম্প। জনশ্রুতি
রয়েছে, নদী ও সাগরের কুল ঘেষে স্থাপিত পাম্প নাকি মাদক পাচারের আখড়া! যার
মধ্যমে প্রতিদিন আয় করছে বিশাল অংকের অবৈধ সম্পদ।
এলাকাবাসীর দেয়া তথ্যমতে, ফরিদুল হক নান্নু বিভিন্নভাবে
অনৈতিক ব্যবসার মাধ্যমে ত্রাস সৃষ্টি করে মানুষকে ভয় হুমকির মধ্যে
রেখেছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসার গুরুতর অভিযোগ তুলেছে অত্র
এলাকার সচেতন মহল। দখলকৃত সেই জায়গায় বিভিন্ন মানুষকে পৃথক পৃথকভাবে প্লট
বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছে অবৈধ সম্পদ। বর্তমানে ওই দখলকৃত জায়গায় গড়ে
তুলেছে বিভিন্ন ভাড়াবাসা ও দোকানপাটসহ অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তার
অস্ত্র ও ভাড়াটে বাহিনীর রাম রাজতের ফলে অত্র এলাকার কেউ মুখ খুলে কিছু
বলার সাহস রাখছে না। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলেই প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়।
সূত্র মতে, দখলকৃত সেই
জায়গায় প্রতি রাত্রে গড়ে উঠে রমরমা বাণিজ্য। ইয়াবা খালাসের মূল পয়েন্ট
হিসেবেও এই জায়গাটি ব্যবহৃত হয়। অত্র এলাকায় শহরের চিহ্নিত ইয়াবা
কারবারি, ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসীদের জলসায় রূপান্তর হয় প্রতি রাত্রে।
পুলিশ প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকলেও অভিযানের পর আবার গড়ে উঠে জুয়া
নামক “ক্যাসিনোর” আসর। আইনকে তোয়াক্কা না করে সন্ত্রাসীদের আখড়ায় পরিণত
হয় তার দখলকৃত এলাকা। দফায় দফায় কয়েকবার প্রশাসনিক অভিযান পরিচালনা করা
হলেও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দখলকৃত জায়গা বিক্রি চলছে অবাধেই।
ইয়াবার ট্রানজিট পয়েন্ট খ্যাত ওই এলাকায় তেল বিক্রির মাধ্যমকে শো’অফ করে
ট্রলারে করে মায়ানমার থেকে ইয়াবা এনে রমরমা বাণিজ্য করছে বলে জানান
স্থানীয়রা। তার আস্তানা খ্যাত জায়গায় তেল বিক্রির আড়ালেই চলছে মাদক
ব্যবসা। এলাকাবাসী জানান, যুবসমাজকে ধ্বংস করে মরণনেশা ইয়াবা থেকে সমাজকে
রক্ষার্থে এলাকায় আবারো অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের আখড়ায়
যেন নষ্ট করে দেয়া হয়। সেই দাবি তুলেন অত্র এলাকার সচেতন মহল।
অপরদিকে, একই এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ রিদওয়ানের পুত্র মোঃ হায়দার
কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ফরিদুল হক নান্নুর বিরুদ্ধে ছিনতাই ও
চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে এজাহার দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযুক্ত নান্নু আমার কাছ থেকে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দাবি করে আসছিল, আমি
চাঁদা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় আমাকে রাস্তায় অতর্কিত তিন থেকে চারজন
অজ্ঞাত সহ এলোপাতাড়ি মারধর করে। আমার কাছ থেকে নগদ ৩৫ হাজার টাকা,
মোবাইলসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। এ বিষয়ে আমি থানায় অবহিত করেছি।
উল্লেখ্য, মৃত নুরুল হক কোম্পানির ছেলে
কক্সবাজারের ইয়াবা ব্যবসায়ী ও ভূমিদস্যু ফরিদুল হক নান্নু দৈনিক
কক্সবাজার একাত্তর পত্রিকা অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে বর্তমানে জেল
হাজতে রয়েছে। শহরের স্বতেন মহলের মতে তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা
হলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক কাঞ্চন
দাস বলেন, শহীদুল হক নান্নুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে। দৈনিক
কক্সবাজার ৭১ পত্রিকা অফিসে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় তাকে জেলহাজতে
পাঠিয়েছে। জামিনে বের হলে তার বিরুদ্ধে এই বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ওসি
স্যারের পরামর্শক্রমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।