ইয়াবা পাচারের প্রবেশদ্বার খ্যাত টেকনাফে পুলিশী কার্যক্রমে স্থবিরতার
সুযোগে ইয়াবা তথা মাদক পাচার বেড়েই চলছে।
পুলিশী অভিযান না থাকায় কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আইন-শৃঙ্খলা
পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। উখিয়া-টেকনাফের মাদক
কারবারীরা ডজ ডজন মামলা নিয়ে প্রকাশ্য ঘুরা ফেরা করছে। পুলিশে নিস্ক্রিয়
ভূমিকায় ইয়াবার গডফাদার রা নতুন করে শুরু করেছে মাদক ব্যবসা ।
সম্প্রতি সাবেক মেজর (অব: ) সিনহা নিহতের পর পুলিশের কার্যক্রমে ভাটা
পড়ায় মাদক কারবারীরা উৎসাহ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সীমান্তের স্বচেতন
মহল। বলতে গেলে উখিয়া-টেকনাফে গত ১ মাস পুলিশের কোন অভিযান তমেন নজরে
পড়েনি। নেই পেট্রোল ডিউিটিও। সম্প্রতি কক্সবাজারের মাঝির ঘাট এলাকা থেকে
র্যাব ষাট কোটি টাকার মাদক উদ্ধার,টেকনাফে বিজিবির সর্ববৃহত্তর চালান
আটক, টেকনাফের হোয়াইক্যং খারাংখালী সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে পাচারের সময়
ইয়াবার চালান আটক ইয়াবার আবারো জমজমাট ব্যবসার প্রমাণ বহন করে।
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি
টেকনাফ থানা থেকে প্রত্যাহারকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছরা পুলিশ
তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ সাত পুলিশ সদস্যকে চাকরি থেকে
সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ।
প্রদীপসহ আসামিরা এখন কারাগারে রয়েছেন । গত ১১ আগস্ট টেকনাফ থানায় পদায়ন
করা হয় ওসি মো. আবুল ফয়সলকে। পরে ২০ আগস্ট তাকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে
বদলী করা হয় ।
উপরোল্লিখিত কারণে টেকনাফে পুলিশের কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে । এই সুযোগে
ইয়াবা পাচারে নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করছে পাচারকারীরা । পাচারের সাথে
জড়িতদের পঞ্চাশ ভাগই রোহিঙ্গা।
মেজর সিনহা নিহতের পর মাদক চোরাচালানে পুলিশের নজরদারি অনেকাংশে কমে গেছে
। ইয়াবার মূল ব্যবসায়ীরা যারা ইতিপূর্বে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল তাদের কেউ
কেউ প্রকাশ্য হচ্ছে । বিভিন্ন কৌশলে ইয়াবা পাচার হচ্ছে ।
মিয়ানমারে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের দিয়ে টেকনাফের মাদক ব্যবসায়ীরা সরাসরি
ইয়াবা পাচার করছে । এসব মাদক রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছাড়াও বিভিন্নস্থানে মজুদ
করা হচ্ছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে ।
টেকনাফ থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসে থানায় মাদক বিরোধী অভিযান
খুব একটা হয়নি । গ্রেফতার ও মামলার সংখ্যাও তুলনামূলক অনেক কম । কমেছে
জিডি ও সড়কে নেই পুলিশের টহল। থানায় ভেতর জনসাধারণের যাতায়াতও কমে গেছে
।
জানা গেছে, টেকনাফে দুই লাখ মানুষের মধ্যে আশি ভাগ কোনো না কোনোভাবে
ইয়াবা ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট । গোয়েন্দ ঐ সূত্র জানায়, টেকনাফে পুলিশের
অভিযান কমে যাওয়ায় মাদকের পাচার কয়েকগুণ বেড়েছে । অভিজ্ঞরা বলছেন,
পুলিশের কার্যক্রম থমকে যাওয়া মাদক ব্যবসায়ীদের নেটওয়ার্ক বেড়েছে ।
পুলিশের কার্যক্রম জোড়দার করে মাদক সিন্ডিকেট এখনই ভেঙ্গে দিতে হবে ।
পুলিশের কার্যক্রম স্থবির হওয়ায় উখিয়া- টেকনাফ মাদক পাচারের নিরাপদ রুট
মনে করার প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে কারবারিদের ।