টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নে DFAT AHP II এর অর্থায়নে Oxfam in Bangladesh এর কারিগরি সহযোগিতায় মুক্তি কক্সবাজার কর্তৃক বাস্তবায়িত “DFAT AHP Bangladesh Rohingya Response Phase III Inclusive for the Selected Host Community of Teknaf upazila, Cox’s Bazar District প্রকল্পের আয়বৃদ্ধিমূলক কর্মকান্ড, ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনার জন্য ১৫০ জন উপকারভোগীদের নগদ অর্থ- সহায়তা হিসেবে ৬০০০ টাকা এবং ১৫০ জন প্রাণিসম্পদ পালনকারী (বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তি) উপকারভোগীদের মধ্যে নগদ অর্থ-সহায়তা হিসেবে ৫০০০ টাকা করে নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
প্রকল্প সমন্বয়কারী মো: ফয়সাল বারী এর সঞ্চালনায় ২ নং হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হোছেনের সভাপতিত্বে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ কামরুজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, টেকনাফ, কক্সবাজার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তি ককসবাজার এর উপ- প্রধান নির্বাহী সৈয়দ লুৎফুল কবির চৌধুরী, টেকনাফ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ মহিবুল্লাহ, টেকনাফ উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোহাম্মাদ খোরশেদ আলম এবং অক্সফামের সিনিয়র ইএফএসভিএল অফিসার মোঃ ইকবাল ফারুক।
প্রধান অতিথি বিতরণ অনুষ্ঠানে বলেন যে, অত্র এলাকায় রোহিঙ্গা আগমনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ দরিদ্র জনগোষ্ঠির উন্নয়নে সরকারী ও বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা একসাথে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধ্বেক নারী তাই দেশের উন্নয়নে নারী ও পুরুষদের সমানভাবে কাজে সম্পৃক্ত হতে হবে তা নাহলে দেশের কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রশিক্ষণ পরবর্তী নগদ অর্থ-সহায়তা প্রদানের জন্য মুক্তি কক্সবাজার সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান।
বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তি কক্সবাজার এর উপ- প্রধান নির্বাহী সৈয়দ লুৎফুল কবির চৌধুরী বলেন যে, সরকারের পাশাপাশি মুক্তি কক্সবাজার, কক্সবাজার জেলায় সমাজে পিছিয়ে পড়া হত দরিদ্র জনগোষ্ঠির দারিদ্রতা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন,প্রতিবন্ধি ব্যক্তি, জীবিকায়ণসহ সমাজের নানা অসংগতি দুর করার লক্ষ্যে কাজ করে। তিনি সুবিধাভোগীদের উদেশ্যে বলেন যে, হ্নীলা ইউনিয়নে এর আগেও মুক্তি ককসবাজার অনেকগুলো প্রকল্পের মাধ্যমে দারিদ্রতা দূরীকরনের জন্য কাজ করেছে তারই ধারাবাহিকতায় অক্সফ্যাম বাংলাদেশ এর কারিগরি সহযোগিতায় এ প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করে আসছে। তিনি সুবিধাভোগীদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, আজকে আপনাদের মধ্যে যে অর্থ -সহায়তা প্রদান করা হয়েছে তার যথাযথ ব্যবহার করবেন এবং প্রানিসম্পদ পালনে কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিলে উপজেলা প্রানিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করার আহবান জানান। তিনি আরো বলেন যে, আপনারা যদি ভালভাবে কাজ করেন তাহলে আপনাদের পাশে মুক্তি ককসবাজার অতীতেও ছিল, বর্তমানেও আছে আর ভবিষ্যতেও থাকবে।
বিতরন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে টেকনাফ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন যে, আজকে যে নগদ অর্থ-সহায়তা প্রদান করা হবে তা সঠিক কাজে ব্যবহার হচ্ছে কিনা তা দৃঢভাবে তদারকি করার জন্য বাস্তবায়নকারী সংস্থা মুক্তি কক্সবাজারকে আহবান জানান এবং তিনি সুবিধাভোগীদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, আপনাদের প্রানিসম্পদ পালনে কোন সমস্যা দেখা দিলে উপজেলা প্রানিসম্পদ অফিস ও উপজেলা প্রানিসম্পদ অফিসের মাঠ কর্মীদের যোগাযোগ করার আহবান জানান।
বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে টেকনাফ উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা প্রতিবন্ধি উপকারভোগীদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, প্রতিবন্ধি ব্যক্তিদের জীবনমান উন্নয়নে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা অনেক কাজ করেছেন তারই ধারাবাহিকতায় প্রতিবন্ধি ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা বৃদ্ধি করে প্রতিমাসে ৮৫০ টাকা নির্ধারণ করেছেন, পাশাপাশি প্রতিবন্ধি ব্যক্তিদের শতভাগ ভাতা প্রদানের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি প্রতিবন্ধি ব্যক্তিদের আরো বলেন যে, আপনাদের ভাতা ও কার্ড নিয়ে কোন ধরনের সমস্যা হলে প্রতি রবিবার ও সোমবার উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে সরাসরি যোগাযোগ করার আহবান জানান এবং যাহারা এখনো অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধি ব্যক্তি ভাতার আওতায় আসেননি তাদের প্রতি বছর জুলাই ও আগস্ট মাসে অনলাইনে আবেদনের আহবান জানান।
বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অক্সফামের সিনিয়র ইএফএসভিএল অফিসার বলেন যে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বেশি বেশি আমিষ জাতীয় খাবার খাওয়া খুবই প্রয়োজন। আপনারা প্রশিক্ষনে লব্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে নতুন কৌশল অবলম্বন করে বেশি বেশি হাসঁ মুরগি উৎপাদনের মাধ্যমে পারিবারিক চাহিদা পূরণ করতে পারলেই আমাদের সমাজ থেকে পুষ্টির অভাব দুর করা সম্ভব হবে।
বিতরণ অনুষ্ঠানের সভাপতি ও ২ নং হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হোছেন বলেন যে, এই প্রকল্পের অধীনে হ্নীলা ইউনিয়নে উপকারভোগী নির্বাচন খুবই স্বচ্ছতার সাথে মুক্তি কক্সবাজার সম্পন্ন করেছেন। মুক্তি ককসবাজার ও অক্সফ্যাম বাংলাদেশকে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রকল্প আরো বাস্তবায়নের জন্য আহবান জানান। তিনি সুবিধাভোগীদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, আজকে নগদ অর্থ- সহায়তা বিতরণ করা হচ্ছে তার যথাযথ ব্যবহার করতে হবে কোন ভাবেই পরিবারের অন্য কোন কাজে এই টাকা ব্যবহার করা যাবেনা, যদি কেউ এই সহায়তা সঠিকভাবে ব্যবহার করেন নাই এমন অভিযোগ পাওয়া গেলে ভবিষ্যতে সে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রদত্ত সকল সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন। প্রশিক্ষণ পরবর্তী নগদ অর্থ-সহায়তা বিতরণের জন্য তিনি মুক্তি কক্সবাজার সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান।
বিতরণ অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ২ নং হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ বশির আহমেদ ও প্রতিবন্ধি সদস্য মোঃ নুরুল মোস্তফা।
বিতরণ অনুষ্ঠানে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন হ্নীলা ইউনিয়নের ইউপি সদস্যবৃন্দ, সাংবাদিক, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, মুক্তি ককসবাজার এর হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মো: দিদারুল আলম, প্রকল্প কর্মকর্তা শামীম হাসান খান, কমিউনিটি ফ্যাসিলিটেটর মো. শাহজালাল, আকতার কামাল, দিলোয়ারা বেগম, মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ প্রমূখ।