“দেশের বায়ু, দেশের মাটি, গাছ লাগিয়ে করবো খাঁটি”এ স্লোগানকে সামনে রেখে কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলাধীন গর্জনিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত “বৃহত্তর থিমছড়ি সামাজিক উন্নয়ন ফোরাম” এর আজ সকাল ১১.০০ টা থেকে শুরু করে বিকাল পর্যন্ত দিনব্যাপী বৃক্ষ রোপন ও চারা বিতরণ অভিযান সম্পন্ন করা হয়।ইসলামের দৃষ্টিতে, “যদি একটি গাছের চারা লাগায় অথবা বীজ রোপন করে, অতপর সেই গাছ ও ফসল দ্বারা কোনো মানুষ উপকৃত হয় কিংবা পশুপাখি ভক্ষণ করে, এর বিনিময়ে তার আমলনামায় সদকার সওয়াব লিখিত হয়। কোনো ব্যক্তি যদি একটি বৃক্ষ রোপণ ও পরিচর্যা করে তাহলে ওই গাছটি যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন ঐ ব্যক্তির আমল নামায় সওয়াব লেখা হতে থাকবে”।আমাদের বাড়ির চারপাশে, রাস্তাঘাটে, পার্কে, বাগানে, রেল লাইনের ধারে এবং পতিত জমিতে তথা যেকোনো ফাঁকা স্থানে চারা গাছ লাগানােই হলো বৃক্ষরােপণ। গাছপালা আমাদের পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। গাছপালা নানাভাবে আমাদেরকে সাহায্য করে। গাছপালা আমাদেরকে ফুল ও ফল দেয়। তীব্র রােদের সময় ছায়া দেয়। গাছপালা বৃষ্টি হতে সহায়তা করে এবং ভূমির ক্ষয় রােধ করে। গাছ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। পরিবেশ সংরক্ষণে বৃক্ষ রােপণ খুবই জরুরি। বিশ্বের তাপমাত্রা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৃথিবীর চারপাশে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছে। আমাদের দেশের পরিবেশ বিশেষ করে শহর অঞ্চলের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। আমাদের বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। জ্বালানি ও বাসস্থানের প্রয়ােজনে মানুষ নির্বিচারে গাছ কাটছে ও বন জঙ্গল নিধন করছে। এভাবে গাছ কাটার ফলে বনাঞ্চলের গাছপালা উজাড় হয়ে যাচ্ছে। গাছপালা বায়ু দূষণ রােধ করতে সহায়তা করে। বনাঞ্চল পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে। একটি দেশের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য কমপক্ষে তার মোট ভূখণ্ডের ২৫% বনভূমি থাকা প্রয়ােজন। কিন্তু আমাদের দেশের ভূখণ্ডের মাত্র ৯% বনভূমি আছে। বর্তমান হারে বনের গাছপালা কাটা বন্ধ না হলে অচিরেই আমাদের বনাঞ্চল গাছপালা শূন্য হয়ে পড়বে। আমাদের দেশে ও বনে গাছপালা না থাকলে দেশ একদিন মরুভূমিতে পরিণত হবে। তাই দেশের পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে আমাদেরকে বেশি করে গাছ লাগাতে হবে , বৃক্ষরােপণ কর্মসূচি পালন করতে হবে ।
বৃহত্তর থিমছড়ি সামাজিক উন্নয়ন ফোরাম এর সভাপতি মুহিব উল্লাহ মুহিব বলেন, বিগত ১০ শে জুলাই ২০২০ ইং তারিখে গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সৈয়দ নজরুল ইসলাম মহোদয় আমাদের সিনিয়র সদস্যদেরকে আপ্যায়ন করেন ।সে সময় তিনি আমাদেরকে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ শেয়ার করেন এবং এলাকার উন্নয়নে উৎসাহিত করেন ।এতে আমরাও ফোরামের বিগত সম্পন্ন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড গুলো ওনার কাছে তোলে ধরি। তৎমধ্যে চেয়ারম্যান মহোদয় আমাদের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের জন্য আরো বেশি উৎসাহিত করেন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সেই সাথে আমাদের এলাকায় বৃক্ষ রোপণ ও চারা বিতরনের পরামর্শ প্রদান করেন। তৎক্ষণাৎ আমাদের কর্মকান্ডের প্রতি আনন্দিত হয়ে ওনার পক্ষ থেকে কয়েকশো চারা উপহার দেন। তিনি আমাদের কার্যক্রমে সব সময় ফোরামের পাশে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন বলে অঙ্গীকার করেন। ওনার এমন সতঃস্ফূর্ত অঙ্গীকারে ফোরামের সকল সদস্যে আনন্দিত এবং কৃতজ্ঞ ।আর আজকের এ মহান উদ্যোগের জন্য আমি এবং আমার ফোরামের পক্ষ থেকে ওনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ।
আজকের বৃক্ষরোপন ও চারা বিতরণ অভিযানটি উদ্ভোধন করেন গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এস.আই মোহাম্মদ মাহাবুবুল আলম, উপস্থিত ছিলেন গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ৪ নং ওয়ার্ড়ের মেম্বার কবির আহম্মদ, ৩নং ওয়ার্ড়ের মেম্বার আব্দুল জাব্বার, সাবেক মেম্বার জাফর আহম্মদ, ৪ নং ওয়ার্ড়ের সাবেক মেম্বার জোবাইর আহম্মদ, মোহাম্মদ আলী সর্দার, বিশিষ্ট সমাজসেবক মোহাম্মদ আলম, কেয়ার বাংলার কর্মকর্তা সাগর বড়ুয়া, রশিদ আহম্মদ, থিমছড়ি অরবিট মডেল একাডেমীর পরিচালক সুলতান আহম্মদ, ব্যবসায়ী সৈয়দ আহম্মদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি দিদারুল আলম আঙ্গুর, সাধারন সম্পাদক মোতাহের আহম্মদ, সাবেক সভাপতি মুফিজুর রহমান মুফিজ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মুনিরুল আলম মুনির, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ নুর, ক্রীড়া সম্পাদক এহেছান উল্লাহ, ত্রাণ ও তহবিল বিষয়ক সম্পাদক আবুল মনসুর কোম্পানী , যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফোরকান আহম্মদ, প্রচার সম্পাদক হারুন অর রশিদ, সহ-প্রচার সম্পাদক হাফেজ মোহাম্মদ জুনাইদসহ আরো অনেকেই ।উল্লেখ্য যে, এলাকার সকল গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাদের এই মহৎ কাজের প্রতি স্বাগত জানিয়েছেন এবং সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছে