মাদকবিরোধী অভিযানের কারণে দীর্ঘদিন
আত্মগোপনে থাকার পর ফের ‘রাজপ্রাসাদে’ ফিরতে শুরু করেছে উখিয়া-টেকনাফের
ইয়াবা ডনরা। একদিকে করোনা,অপরদিকে মেজর সিনহা হত্যার ঘটনার জের আইনশৃংখলা
বাহিনীর ব্যস্ততার সুযোগে অনেকেই বাড়ি ফিরছে বলে স্থানীয়দেও ধারণা ।
ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের আরব আমিরাত(দুবাই) মালয়েশিয়া,সিঙ্গাপুর থেকে
উখিয়া-টেকনাফের অনেক মাদক কারবারী দেশে ফিরেছে বলে সামাজি যোগাযোগ মাধ্যম
সহ স্থানিয় সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, ইয়াবা বিক্রি করে রাজপ্রাসাদের মতো বাড়ি বানিয়েছেন
টেকনাফের মাদক বিক্রেতারা। এসব বাড়িতে নিরাপত্তার জন্য বসানো হয়েছে
সিসিটিভি ক্যামেরাও। সীমান্তে বাসিন্দারা এসব বাড়ির মালিকদের ‘ইয়াবা
রাজা’ নামে ডাকেন। এই মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকে ইয়াবার ‘বাবা’ বলেও ডাকেন।
ইয়াবা ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করায় জনমনে আতংক বিরাজ করছে। অপর
দিকে আইনশংখলা ও অবনতির কথা উড়িয়ে দিচ্ছেনা স্বচেতন মহল।
স্থানীয় প্রশাসন ও সীমান্তে বাসিন্দারা জানান, ২০১৮ সালে মাদকবিরোধী
বিশেষ অভিযান শুরু হলে ইয়াবার গডফাদাররা ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। এখন
সীমান্তের পরিস্থিতি বুজে শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আবারও ঘরে ফিরছে। এত
কঠোর অভিযানের পরো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছে ইয়াবার বড় বড় চালান।
স্থানীয়রা জানান, মাদকের টাকায় টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নে,সদরের দক্ষিণ
জালিয়াপাড়া, মৌলভীপাড়া, ডেইলপাড়া, নেঙ্গরবিল, গোদারবিল, কুলালপাড়া ও লেদা
এলাকায় গড়ে উঠেছে রাজ প্রাসাদের মতো অর্ধশতাধিক বাড়ি। এসব বাড়ির মালিকরা
ইয়াবার রাঘব বোয়াল হিসাবে পরিচিত। জেলার সীমান্ত উপজেলা উখিয়া-টেকনাফের
তালিকাভুক্ত বিদেশ ফেরত ও আত্মগোপনে থাকা ইয়াবা কারবারীরা প্রকাশ্যে
ঘুরা ফেরা করায় সাধারণ জনতার মাঝে উদ্বেগ উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে। টেকনাফ
সদর ইউনিয়ন,পৌর সভা,সাবরাং.হ্নীলা,হোয়াইক্যং,অপ
ফালংখলী,থাইংখালী,বালুখালী,কুতু
ময়দানে চষে বেড়াচ্ছে বলে এলাকা সূত্রে খবর এসেছে। সূত্রে প্রকাশ-
টেকনাফের হ্নীলা ইউপির লেদার আলীখালী এলাকার বাসিন্দা কুখ্যাত সন্ত্রাসী
ও ইয়াবা গডফাদার জমিল আহমদ প্রকাশ্যে ঘুরা ফেরা করছে। সে লেদার গবী
সোলতানের পুত্র। তার বিরুদ্ধে পত্যক্ষভাবে এলাকার কেউ মুখ খুলতে রাজি নন।
এলাকা সূত্রে জানা যায় যে,ইয়াবা কারবারীদের মদদ দাতা অস্ত্রদারী সন্ত্রাস
জমিলের অনেক অভিযোগ আছে। তবে ভয়ে কেউ মুখ খুলার সাহস পাচ্ছেনা কেউ। ইয়াবা
ব্যবসায়ী ও অস্ত্রদারি সন্ত্রাস জমিল,রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একলোক কে
এলোপাথাড়ি কুপিয়ে উল্লাস করেছে। জমিলের অস্ত্রের ভয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য
ব্যক্তিদের বা প্রশাসনকেও অভিযোগ করেন নি, নির্যাতিত ঐ ব্যক্তি। এই
ইয়াবা ব্যবসায়ী জমিল ৩০-৪০ সদস্যের গ্যাং তৈরী করে লেদা,আলীখালীতে
রাজারহালে চলাচল করছে। জমিল আহমদের ভয়ে পুরো এলাকার মানুষ আতঙ্কে বসবাস
করে। সে যতদিন গ্রেফতার না হবে, ততদিন এলাকার লোকজন স্বাধীন ভাবে চলাচল
করতে পারবে না বলে স্থানীয় লোকজন সাংবাদিকদের জানান। অভিযোগ রয়েছে জমিল লেদা,শালবাগান,মোচনী রোহিঙ্গা
ক্যাম্পের সকল ইয়াবা ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করে। ইয়াবা বিক্রি করে
কোটিপতি বনে যাওয়া লেদা আলী খালী এলাকার আরেক ইয়াবার গডফাদারের নাম মোঃ
ইসমাঈল প্রকাশ মেম্বার। সে আলী খালীর ঠান্ডা মিয়ার পুত্র। লেদা আলী খালী
এলাকায় সর্বদা তাকে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। অপরদিকে মাদক ব্যবসার সাথে
সক্রিয় দেখা যাচ্ছে লেদা এলাকার হোছন আহমদেও পুত্র রবি আলম,অলি আহমেদ
পুত্র আব্দুস সমদ, মোহাব্ব্যতের পুত্র শহীদ উল্লাহ আবুল বশারের পুত্র
আব্দুর রহমান, মীর কাসেমের পুত্র জাহাঙ্গীর। তারা হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা
ষ্টেশনের, পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ার স্থায়ী অধিবাসী বলে জানা গেছে। এছাড়া
অধরায় থাকা টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউপির কিছু ভয়ংকর ইয়াবা কারবারী নতুন করে
মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে।তাদের মধ্যে মোহাম্মদ রফিক(২৯)পিতাঃ
সোলতান আহমদ,সাং পূর্ব মহেশখালীয়া পাড়া, খারাং খালী,ওয়ার্ড নংঃ ০৮,নুর
মোহাম্মদ প্রকাশ বেক্কাইয়া,পিতাঃ খুইল্যা মিয়া, সাং, পূর্ব মহেশখালীয়া
পাড়া, খারাং খালী। ওয়ার্ড নং-০৮, বার্মাইয়া আবদুল মালেক(৩৬),পিতাঃ
অজ্ঞাত,খারাংখালী গ্যাসপাম্পের পাশে, পূর্ব মহেশখালীয়া
পাড়া,খারাংখালী,ওয়ার্ড নং-০৮ ,আমির হোসন(২৮)পিতাঃ বাঁচা মিয়া সাং-পূর্ব
মহেশখালীয়া পাড়া,খারাংখালী ওয়ার্ড নং-০৮,নুর নবী(২৮)পিতাঃ মৃত হাজী নুরুল
ইসলাম, সাং পূর্ব মহেশখালীয়া পাড়া,খারাং খালী ৮নং ওয়ার্ড। হোয়াইক্যং ৫ নং
ওয়ার্ডের নয়াপাড়া বটতলীর কায়ছার,ফেরদাউস, মাঈন উদ্দিন, শাহীন পারভেজ
লালু,পিতাঃ নুর হোসন,সাং পূর্ব সাত ঘরিয়া পাড়া, নয়া বাজার,৭ নংওয়ার্ড।
কান্জর পাড়ার রায়হান প্রকাশ বিকাশ ও হুন্ডি রায়হান, আমির হোসন খারাংখালী
৮নং ওয়ার্ড , ছৈয়দ আলম প্রকাশ উনাইয়্যা পূর্ব মহেশখালীয়া পাড়া, ফারুক,
পূর্ব মহেশখালীয়া আবদুল মালেক বার্মাইয়া, শাহজাহান পশ্চিম মহেশখালীয়া
পাড়া, খারাং খালী। নুরুল ইসলাম পূর্ব মহেশখালীয়া পাড়া, নুর মোহাম্মদ
প্রকাশ বেক্কাইয়া, আবদুল মন্নান,শামসুল আলম, পূর্ব মহেশখালী পাড়া,
খারাংখালী। নুর নবী খারাং খালী, জাফর আলম প্রকাশ জাফরী, নুর হাশেম প্রকাশ
গুরা পুইত্তা,ওমর সিদ্দিক, মোহাম্মদ রফিক,মোহাম্মদ ইসমাইল,ছৈয়দ
নুর,সাদেক, ইউনুস,শাহজাহান,মোহাম্মদ আলম প্রকাশ লেংড়া আলম,দলোয়ার হোসেন
নুর খোকন শাহাদাৎ , ইসমাঈল , ছৈয়দ নুর গং তারা নিরবেই ইয়াবা পাচার কাজ
অব্যাহত রেখেছে। অপর দিকে উখিয়া উপজেলার
ফালংখলী,থাইংখালী,বালুখালী,কুতু
বলে উখিয়ার কর্মরত সাংবাদিকরা জানান। তাদের মতে থাইংখালীর ইয়াবার ডিপু
খ্যাত রহমতের বিলের মৃত্য আব্দুচছালামের পুত্র আব্দুররহীম,আদুল গফুরের
পুত্র জামাল উদ্দিন,বৈদ্য জাফরের পুত্র রহিম,দক্ষিন রহমতের বিলের
কালাপুতু, আনোয়ার আলীর পুত্র মন্জুর, ফালংখালী বটতলীর রাসেল, ফালংখালী
২নং ওয়াডের বক্তার মেম্বার,৩নং ওয়ার্ডের খোকন,করিম সহ অনেক ইয়াবা গডফাদার
সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ইয়াবার বদৌলতে তারা প্রচুর সম্পদ,জায়গা জমি ধন সম্পদেও
মালিক বনেছে। তাদের বর্মাইয়্যা ইয়াবা গডফাদার নাজমুল হক,মংডুর সোহেল
বর্তমানে থাংখালীতে ইয়াবা ব্যবসায়ীদরে সাথে গোপন বৈঠক করেছে বলে ও জানা
গেছে। সোহেল ও নাজমুল ১৯ নং ক্যাম্পে বসবাস করলেও আড্ডা ও বসবাস করে
বেশির ভাগ থাইংখালীতে বলেই জানান এলাকাবাসী। মাদক নির্মূলের স্বার্থে
তাদের আইনের আওতায় না আনা হলে মাদকমুক্ত এলাকা ঘোষনা কঠিন হবে। স্বচেতন
মহলের মতে- মাদকের বিরুদ্ধে দ্রুত চিরুনী অভিযান জোরদার প্রয়োজন। তবে
নিরীহ মানুষ অযথা হয়রানী যাতে না হয় সে দিকে ও নজর দেয়া জরুরী। এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা পুলিশ
সুপারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,আমাদের কাছে ও তথ্য আছে বিদেশ
থেকে অনেক মাদক কারবারীরা ফেরত আসছে। মাদক কারবারীরা উল্লাস করার কোন
কারণ দেখছিনা। মাদক বিরোধী অভিযান আরো কঠোর হবে