
নুর হোসেন চেয়ারম্যানের বিরোদ্ধে ভূতুড়ে মামলায় এজাহারে ব্যাপক গড়মিল।
গত ১৪ জুন ২০২০ সালের একটি ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে টেকনাফ থানার সাবেক বরখাস্ত কৃত এবং হত্যা মামলার আসামী ওসি প্রদীপ কুমার দাশ কতৃক টেকনাফের বর্তমান সময়ের সর্বাধিক জনপ্রিয় ৪ নং সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান,টেকনাফ এবং বর্তমান টেকনাফ থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুর হোসেন চেয়ারম্যানের বিরোদ্ধে একটি মিথ্যা ভিত্তিহীন বানোয়াট ভাবে ভূতুড়ে মামলা দায়ের করেন। যাহা অন লাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকা এবং বাংলাদেশের অধিকাংশ সরকারি ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলে একটি সাংবাদ ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়।সাংবাদটি ছিল সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান এবং টেকনাফ থানা যুবলীগের সম্পাদক নুর হোসেনকে মিথ্যা অভিযোগে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত হয়ে মিথ্যা ভিত্তিহীন মামলায় জড়ানোর সাংবাদ।যখন বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক ভাবে সমালোচিত হয়, তখন আমি মামলার এজাহার এবং জব্দ তালিকা পড়ে আমার কাছে মামলাটি শুধু মিথ্যা ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত মনে হয়নি। মামলাটি হাস্যকর বটে। এই মামলার এজাহার গর্ভের বক্তব্য দেশের প্রচলিত আইনসহ উচ্চ আদালতের রুলিং এর সাথে ব্যাপক অসংগতি লক্ষ্য করেছি। নিম্নে এজাহারের অসংগতি তুলে ধরেছি ঃ
১।এজাহারে ৮, ৯,১০নাম্বার লাইনে বলা হয়েছে নুর হোসেন চেয়ারম্যান সহ কয়েকজন মাদক ব্যাবসায়ী সাবরাং মন্ডলপাড়া স্হানে মাদক বিক্রির উদ্দেশ্যে জড়ো হয়। সাংবাদটি পেয়েছে রাত ১২.১৫ মিনিটে। সাংবাদ পাওয়ার পর উল্লেখিত স্হানে রওয়ানা হয় এবং ঘটনাস্থলে পোছে রাত ১২.৪৫মিনিটে। এখানে টেকনাফ থানা থেকে চেয়ারম্যানের বাড়িতে পৌছতে কখনো ৩০ মিনিট লাগার কথা নয়। সুতরাং এখানে এই মামলার প্রথম সন্দেহ।
২।এজাহারে ১৫ নং লাইনসহ ২৬,২৭,২৮ নাম্বার লাইনে বলা হয়েছে মাদক উদ্ধার করেছে ১২.৪৫ মিনিটে কিন্ত জব্দ তালিকা তৈরি করেছে ১.৫ মিনিটে। ৪০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট কখনো ২০ মিনিটে গননা করা সম্ভব নয়।একটা ট্যাবলেটের জন্য যদি ১ সেকেন্ড গুনতে সময় ব্যায় হয় তাহলে ৪০ হাজার ইয়াবা গগনার জন্য মোট সময় ব্যায় হয় প্রায় ৬৬৬ মিনিট। সুতরাং মনগড়া জব্দ তালিকা তৈরি হয়েছে এতে সুষ্পষ্ট।কারণ উচ্চ আদালতের রুলিং এ স্পষ্টভাবে বলা আছে প্রত্যাকটি ট্যাবলেট আলাদা আলাদা গুনতে হয়।
৩।এজাহারে ১৪,১৫,১৬,১৭ নাম্বার লাইনে বলা হয়েছে পুলিশ যখন চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে পৌছে, তখন পুলিশের উপস্হিতি টের পেয়ে চেয়ারম্যান পালিয়ে যায় কিন্ত অন্ধকার ছিল বিদায় চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। আমার প্রশ্ন যদি অন্ধকার থাকে, তাহলে পালিয়ে যাওয়া ব্যাক্তি যে চেয়ারম্যান, সেটি আপনারা কি করে বুঝলেন?
আবার এজাহারের ৩০,৩১,৩২, নাম্বার লাইনে বলা হয়েছে উপস্হিত স্বাক্ষী চেয়ারম্যানকে টস লাইটের আলোতে চিনতে পারেন। কিন্ত উচ্চ আদালতের সিধান্ত সুস্পষ্টভাবে বলা আছে টর্চ লাইনের আলোতে এবং গভীর রাতে আসামী চিনা বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না। এই মর্ম রুলিং…
a.Recognition by torch and Hurricane at dead of night is doubtful. 5 BLT page 133.
b.Recognition of the accused by the focus of the torch light when the focus was directed towards the witness is doubtful. Recognition of any unknown accused by moonlight is very much doubtful rather it is impossible 9BLD 474.
৪।এহাহারের ১৮,১৯,২৯ নাম্বার লাইনে যে স্বাক্ষী এবং জব্দ তালিকার কোন স্বাক্ষী নিরপেক্ষ নয়। এখানে স্বাক্ষী একজন চকিদার, একজন দপাদার আর কিছু পুলিশ। যাহা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৮৯৮ এর সাথে সম্পূর্ণ বিরোধী।
৫। এজারে ইয়াবা ট্যাবলেটের ওজন দেখানে হয়েছে ৩৯০গ্রাম। আমার প্রশ্ন রাত ১ টায় কোন দোকান খোলা থাকেনা। এত গভীর রাতে ওসি কোন দোকানে কোথায় ওজন পরিমাপ করে ছিল?
চেয়ারম্যান সাহেবের প্রতিপক্ষের প্রশ্ন মামলা যদি মিথ্যা হয় সেই পলাতক ছিল কেন।? শুধু মাত্র পলাতকের ভিত্তিতে কাউকে দূষী করা যায়না। এই মর্মে উচ্চ আদালতের সিধান্ত সমূহ ঃ
Mere absconsion can not always a circumstances to lead to an inference of guilt of the accused as sometimes out of fear and self respect and to avoid unnecessary harassment even an innocent persons remain absconding. 1 BLC page 421. 1BLC page 539.4Blc 582.3BLc 555
যেতেতু মামলার এজাহারে ব্যাপক অসংগতি সুতরাং এই মামলা Quashed হবে। এই মর্মে আদালতের সিধান্ত সমূহঃ
the proceeding of the case at any stage may be quashed even at the initial stage before taking cognizance where allegations in the first information report or the complaint even if they are taken at their face value and accepted in their entirety,do not constitute the offence alleged. 60DLR pa. 17
সুতরাং মামলার এজাহারে যেহেতু ব্যাপক অসংগতি। এই মামলা নুর হোসেন চেয়ারম্যানের বিরোদ্ধে কখনো চলতে পারেনা। সব চেয়ে দুখের বিষয় হচ্ছে একজন ইউপি চেয়ারম্যান পর্যন্ত ওসি প্রদীপের হয়রানি থেকে রেহাই পায়নি। তাহলে টেকনাফের সাধারণ আম জনতার অবস্হান কোথায় ছিল কেউ কি কখনো ভাবতে পারেন? সাধারণ জনতার প্রতি আমার একটা বিশেষ অনুরোধ আমরা যখন কোন অন্যায় দেখব এক সাথে প্রতিরোধ গড়ে তুলার চেষ্টা করি। যদি অন্যায়ের বিরোদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি আল্লাহ ছাড়া পৃথিবীর কোন অশুভ শক্তি আমাদেরকে পরাস্ত করতে পারবেনা। সত্যের জয় সব সময় হবেই।
যাইহোক নুর হোসেন চেয়ারম্যান ম্যানের সাথে মুটো ফোনে কথা বলে যতটুকু জানতে পেরেছি মামলা অত্যান্ত দক্ষ তদন্ত কর্মকর্তা মামলাটি তদন্তে বুঝতে সক্ষম হয়েছে যে একটি মিথ্যা মামলা। তাই তদন্ত কর্মকর্তা উক্ত মিথ্যা মামলা হতে নুর হোসেন চেয়ারম্যানকে অব্যাহতির সুপারিশ করেন। গতকাল উনার এলাকায় পৌছলে এলাকার মানুষ গণ সংবর্ধনা দিয়ে বরণ করে নেন এবং চেয়ারম্যান সাহেবকে পেয়ে সবাই আবেগ অাপ্লুত হয়ে পড়েন। চেয়ারম্যান সাহেবে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
লেখক:এ্যাডভোকেট জিয়াবুল আলম
এ জাতীয় আরো খবর..