রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ১০:২০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
উপকারভোগীদের কৃষি উপকরণ বিতরণ করলেন এনজিও সংস্থা “মুক্তি “ পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিবন্ধীকে ব্যাপক মারধরের অভিযোগ! দেশে ৪ কোটি মানুষের চলছে দুর্দিন,ঋণ করেই চলছে ৭৪ভাগ পরিবার কোস্টগার্ডের ধাওয়ায় ৭ লাখ ইয়াবা পানিতে ফেলে পালাল পাচারকারীরা ‘ইশ্-মার্ট বাংলাদেশ’ প্রভাষক শাহীন সরওয়ার টানটান উত্তেজনায় শেষ হল শেখ রাসেল গোল্ডকাপ;বিজয়ীদের পুরষ্কার তুলে দেন অতিথিগণ টেকনাফে মুক্তি কক্সবাজার কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রকল্পের উপকারভোগীদের মধ্যে প্রশিক্ষণ পরবর্তী নগদ অর্থ সহায়তা বিতরণ টেকনাফে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন অভাবনীয় সফলতায় মেম্বার এনামের প্রতিষ্ঠিত বালিকা মাদ্রাসা টেকনাফে “অক্সফাম” কর্তৃক ভাউচার প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ

পাবনার চাটমোহরের আকাশে বাতাসে উড়ছে ঘুড়ি

পাবনা প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৬ জুন, ২০২০
  • ৫৪৪ বার পঠিত

করোনা ভাইরাসের কারণে চারিদিকে মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে অস্থিরতা,বিরাজ করছে অস্থির পরিবেশ।

আতংক ভার করেছে জীবন-জীবিকায়। করোনার ভয়াবহতা তাই বদলে দিয়েছে চাটমোহরের দৃশ্যপট। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটে চলা মানুষ এখন অনেকটাই ঘরবন্দি। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তাই বলেতো ঘরে বসে থাকা যাবে না।

এ অবস্থায় বাঙালীর ঐতিহ্য ঘুড়ি উড়াতে মেতেছে চাটমোহরবাসী। শিশু,তরুন, বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষ বিকেল হলেই ছুটছেন চাটমোহর মডেল সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে(বালুচর খেলার মাঠ), সরকারী ডিগ্রী কলেজ মাঠে, আফ্রাতপাড়া, চৌধুরীপাড়া, নারিকেল পাড়া এবং কৃষি জমির মাঠে ঘুড়ি উড়াতে। যেন মাঠে মাঠে ঘুড়ি উড়ানোর মেলা বসেছে।

সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, খেলার মাঠসহ উপজেলার বোঁথর, ধুলাউড়ি, উথুলী, ছাইকোলা, হান্ডিয়াল, হরিপুর ও কাটাখালীসহ মুক্ত আকাশে ঘুড়ির মেলা। চলছে ঘুড়ির সুতোয় কাটাকাটি খেলা। এ যেন করোনাকালীন অবসাদ দূর করার এক সুস্থ বিনোদন। আকাশের যেদিকেই তাকাই ঘুড়ি আর ঘুড়ি। শুধু দিন বা বিকেলে নয় রাতেও উড়ানো হয়। রাতের আকাশ যেন হয়ে ওঠে তারার মেলা। ২২ ফুট রকেট ঘুড়িসহ ১৭ রকমের ঘুড়ি উড়ছে চাটমোহরের আকাশে। যা কখনও কেউ দেখেনি, ভাবেওনি। ঘুড়ি উড়ানো প্রতিযোগিতার পাশাপাশি চলছে ঘুড়ি উৎসব। অসংখ্য মানুষ এই উৎসবে শামিল হচ্ছেন। রাজনীতিবিদ,জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ এখন ঘুড়ি উড়ানোতে সময় কাটাচ্ছেন।

উপজেলার কাটাখালী গ্রামে ২২ ফুট রকেট ঘুড়ি তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন রসুন ব্যবসায়ী আনিছুর রহমান (৩৫)। তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করেছেন ঘুড়িটি। আনিছুর রহমান জানালেন, করোনাকালে মানসিক প্রশান্তির জন্যই সবাই এখর ঘুড়ি উড়াচ্ছেন। তার ২২ ফুট রকেট ঘুড়ি তৈরি করতে ৪ দিন সময় লেগেছে। প্রতিদিন ১০ জন বন্ধু অক্লান্ত পরিশ্রম করে এটি বানানো হয়েছে। যেটি আকাশে উড়াতে ১৬ জন মানুষ দরকার হয়। সপ্তাহে একদিন এটি আকাশে উড়ানো হয়। যা উড়াতে ৮ কেজি দড়ি ব্যবহার করা হয়।

চাটমোহর পৌরসভার আফ্রাতপাড়া মহল্লার বাসিন্দা সঙ্গীত শিক্ষক ও সাংবাদিক জামিউল ইসলাম কাবলী ১৭ রকমের ঘুড়ি তৈরি করেছেন। যা বিরল। চাটমোহরে আলোরন সৃষ্টি করেছে। তিনি শুধু গানের ওস্তাদই নয়, ঘুড়ি তৈরির ওস্তাদও বটে। তিনি বিকেল হলেই তার ছেলে মেয়েসহ অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে নিয়ে চলে যান খেলার মাঠে বা বাড়ির পাশের ফাকা জায়গায় ঘুড়ি উড়াতে। উড়িয়ে দেন আকাশে বিভিন্ন রকমের ঘুড়ি। করোনাকালীন সময়ে গতানুগতিক ঘুড়ির পাশাপাশি তিনি তৈরি করেছেন, গোপাল ভাঁড়, লাভ , অক্টোপাস, পেঁচা, পরী, বিচ্ছু, ঢোল, বিমান, রকেট , ঈগল, ঢাউস, কোয়ারিয়া, চিলা, ফেসক্যা, তারা, মানুষ, সাপা ঘুড়ি। লাগানো হয়েছে ঘুড়ির মাথায় বেত। রাতের আকাশে প্রতিটি ঘুড়ি আলো ও শব্দ ছড়ায়।

জামিউল ইসলাম কাবলী জানালেন, শৈশব থেকেই ঘুড়ি উড়াচ্ছি। নানা রঙের ঘুড়ি নিয়ে উৎসবে মেতে উঠতাম। তিনি বললেন, আমিও ৩ বছর আগে চাটমোহরে প্রথম ঘুড়িতে আলোর টুনি বাল্ব সংযোগ করি। যা এখন অনেকেই করছেন। এবার তো করোনার কারণে সবখানেই ঘুড়ি উড়ানোর মেলা বসেছে। এক ঘেয়েমী কাটাতে সবাই বিকেলে বের হচ্ছেন ঘুড়ি হাতে।

চাটমোহর প্রেসক্লাবের সভাপতি, দৈনিক চলনবিল প্রত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশ রকিবুর রহমান টুকুন বললেন, মহামারি করোনার সময়ে করোনা ভাইরাসের কারণে আমরা সবাই অনেকটা ঘরবন্দী। শিশু-কিশোরদেও মানসিক প্রশান্তির দরকার। নেই কোন প্রকার খেলাধূলা। করোনা আমাদের সবকিছু বদলে দিয়েছে। সেক্ষেত্রে ঘুড়ি উড়ানোটা অনেকটা যেন আশীর্বাদ স্বরুপ। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিভিন্ন পেশার মানুষ যারযার অবস্থান থেকে ঘুড়ি উড়িয়ে আনন্দ উপভোগ করছেন এবং একঘেয়েমি দূর করার চেষ্টা করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By Bangla Webs
error: Content is protected !!