কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও বাজারে গরুর হাটের কারনে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব না মেনে গরুর বাজারে ব্যাপক জনসমাগমের ফলে এ সংক্রমণ ঝুঁকিতে পড়েছে বৃহত্তর ঈদগাঁওর জনগণ।
এলাকাবাসী জানান, প্রতিবছর কোরবানীর ঈদের আগে ঈদগাঁওতে গরুর বাজার জমে উঠে। ঈদগাঁও বাসষ্টেশনের দক্ষিণে কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার জমে উঠে গরুর বাজার। বৃহত্তর ঈদগাঁওর ৭ ইউনিয়ন থেকে হাজার হাজার গরু ও বিপুল সংখ্যক ক্রেতাসমাগমের ফলে গরুর বাজারটি বাসষ্টেশন থেকে শুরু হয়ে দক্ষিনে প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে। এতে হাজার হাজার ক্রেতাসমাগম হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবারে গরুর বাজারে ব্যাপক জনসমাগম ও ক্রেতাদের ভীড় দেখা যাচ্ছে। বর্তমান পরিস্হিতে এরকম জনসমাগম ও ব্যাপক ভীড় করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তারা। তাছাড়া বাজারটি প্রধান সড়কের বড় একটি অংশ দখল করে নিয়েছে। তাই গাড়ী চলাচলেও দূর্ভোগের শেষ নেই।
বাস ষ্টেশনের ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, মহাসড়ক জুড়ে গরুর বাজার বসলে যানবাহন চলাচলে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। এর ফলে প্রতি হাঁটের দিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত যানবাহন মহাসড়কে আটকা পড়ায় সংক্রমন ঝুঁকি আরো বাড়ে বলেও জানান তিনি।
গত রমজান মাসে ঈদের কেনাকাটা করতে ঈদগাঁও বাজারের মার্কেট ও বিপনি বিতানগুলোতে ব্যাপক ক্রেতা সমাগম হয়। এর ফলে বৃহত্তর ঈদগাঁওতে করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়।
পরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযান পরিচালনা করে কয়েকটি বিপনি বিতান সীলগালা করে দেন।
আসন্ন কোরবানীর ঈদকে কেন্দ্র করে জমে উঠা পশুর হাটে ব্যাপক জনসমাগমের ফলে ফের সংক্রমণ ঝুঁকিতে পড়েছেন বৃহত্তর ঈদগাঁওর জনসাধারণ।
সচেতন এলাকাবাসী বলেন, বাসষ্টেশনস্হ গরুর বাজারের পরিবর্তে ইউনিয়ন ভিত্তিক পশুর হাঁট বসালে জনসমাগম ও সংক্রমন ঝুঁকি অনেক কমে আসত।
সূত্রে প্রকাশ, বাস্তবায়নাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পের জন্য বৃহত্তর ঈদগাঁওর ইসলামপুর, ইসলামাবাদ, ঈদগাঁও, জালালাবাদ ও চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে রেল লাইন স্হাপনের জন্য সুপরিসর রাস্তা নির্মিত হয়েছে। চওড়া এই রেল রোডের উপর ইউনিয়ন ভিত্তিক আলাদা আলাদা পশুর হাঁট বসানো যায় বলেও মন্তব্য করেন তারা।
চলমান করোনা ঝুঁকি ও সম্ভাব্য সংক্রমন থেকে বৃহত্তর ঈদগাঁওবাসীকে রক্ষায় উপরোক্ত পশুর হাঁটে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পরবর্তীতে ভয়াবহ পরিস্হিতির আশংকা করেছেন সর্বস্তরের জনসাধারণ। স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং মহা সড়কে পশুর হাটের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশরাফুল আফসার বলেন, কোনভাবেই মহাসড়কে পশুর হাট বসতে দেওয়া হবেনা। তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাট পরিচালনা করতে হবে। তাই মূল বাজার থেকে কিছু দূরত্ব বজায় রেখে আরো দু’টি পশুর হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যাতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করা যায়। সরকারের এবারের মূল লক্ষ্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাট পরিচালনা করা।