ভয়াবহ করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকরা (রোহিঙ্গা)। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য ঝুঁকি অনেক বেশি।
সেখানকার ৩১ ভাগ মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস সম্পর্কে কোন ধারণাও নেই। আর বেশিরভাগ মানুষ করোনা সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করেন। এই অবস্থায় তাদের ঝুঁকি কমাতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা জরুরি।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) প্রকাশিত এক জরিপ প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়েছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। কেএনএইচ জার্মানির সহযোগিতায় সমাজকল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) এই জরিপ পরিচালনা করে। জরিপ প্রতিবেদন তুলে ধরেন স্কাস চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা।
বক্তব্য দেন দাতা সংস্থা ‘কে এন এইচ জার্মানি’র কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মারুফ রুমি মমতাজ, ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, ‘কে এন এইচ জার্মানি’র ন্যাশনাল কো-অডিনেটর মাটিলদা টিনা বৈদ্য, প্রোগ্রাম কো-অডিনেটর মনিরুজ্জামান মুকুল প্রমুখ।
মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে উত্থাপিত প্রতিবেদনে পাঁচ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কভিড-১৯ সম্পর্কে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে ভুল ধারণা বিদ্যমান তা দূর করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জোরালো ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। কভিড-১৯ বিষয়ক তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারীরা পিছিয়ে থাকায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনসমূহ কর্মসূচি নিতে পারে। ধর্মমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মসজিদভিত্তিক কভিড-১৯ বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান সাপেক্ষে ক্যাম্পভিত্তিক সকল কার্যক্রমে এনজিও ব্যুরোর মাধ্যমে কভিড-১৯ সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি কভিড-১৯ প্রতিরোধে তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমকে সর্বোচ্চ কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
‘কেএনএইচ জার্মানি’র কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মারুফ রুমি মমতাজ বলেন, বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে করোনা ভাইরাস। রোহিঙ্গা ক্যাম্প জনবহুল হওয়ায় সেখানে ঝুঁকি বেশি থাকবে এটিই স্বাভাবিক। এই ঝুঁকি মোকাবেলায় সচেতনতার বিকল্প নেই। সচেতনতা সৃষ্টিসহ জরিপ প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্রমবর্ধমান করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি মোকাবেলায় কেএনএইচ জার্মানির সহযোগিতায় স্কাস কক্সবাজার জেলার উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে শিশু সুরক্ষা, মনোসামাজিক কাউন্সেলিং সেবা, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও কভিড-১৯ এর ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে সুরক্ষা উপকরণ বিতরণের কাজ করছে।
এই ধারাবাহিকতায় গত মে মাসে করোনাভাইরাস সম্পর্কে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ধারণা ও এবিষয়ে বিদ্যমান সংকট কীভাবে উত্তরণ করা যায়, সে বিষয়ে এই জরিপ পরিচালনা করেছে। এছাড়া সরকারের সহযোগিতায় অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করছে।