রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ০৬:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
উপকারভোগীদের কৃষি উপকরণ বিতরণ করলেন এনজিও সংস্থা “মুক্তি “ পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিবন্ধীকে ব্যাপক মারধরের অভিযোগ! দেশে ৪ কোটি মানুষের চলছে দুর্দিন,ঋণ করেই চলছে ৭৪ভাগ পরিবার কোস্টগার্ডের ধাওয়ায় ৭ লাখ ইয়াবা পানিতে ফেলে পালাল পাচারকারীরা ‘ইশ্-মার্ট বাংলাদেশ’ প্রভাষক শাহীন সরওয়ার টানটান উত্তেজনায় শেষ হল শেখ রাসেল গোল্ডকাপ;বিজয়ীদের পুরষ্কার তুলে দেন অতিথিগণ টেকনাফে মুক্তি কক্সবাজার কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রকল্পের উপকারভোগীদের মধ্যে প্রশিক্ষণ পরবর্তী নগদ অর্থ সহায়তা বিতরণ টেকনাফে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন অভাবনীয় সফলতায় মেম্বার এনামের প্রতিষ্ঠিত বালিকা মাদ্রাসা টেকনাফে “অক্সফাম” কর্তৃক ভাউচার প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ

স্বাধীনতার অর্ধশত বছরেও স্বীকৃতি পায়নি রামুর বীরমুক্তিযোদ্বা ফরিদ আহাম্মদ |বাংলাদেশ দিগন্ত

কফিল উদ্দিন রামু:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২১
  • ৫৫৭ বার পঠিত

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে সুবেদার নুর আহাম্মদের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশ নিলেও এখনো মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি রামুর অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা । এমন একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার কথা তুলে ধরছি। কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের ০৪ নং ওয়ার্ডের মন্ডল পাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা গরীব ফরিদ আহমেদের । স্বাধীনতার অর্ধশত বছরেও এখনো স্বীকৃতি পায়নি মুক্তিযোদ্ধার।

তিনি রামু উপজেলার সদর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের মন্ডল পাড়া গ্রামের মৃত ঠান্ডা মিয়ার ছেলে। বর্তমানে তাঁর বয়স ৬৭ বছর। বয়সের সাথে তাল মিলিয়ে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবেও অসুস্থ। তার সম্তান সন্ততি নিয়ে চলাফেরা করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি চান মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিটুকু। ইতিপূর্বে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রানালয়ের তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও তার নাম থাকলেও। গরীব ফরিদ আহমেদ প্রশাসনের দোর গোড়ায় গিয়ে হতাশ হয়ে ফেরেন, আমলাদের টাকা(খরচ) দিতে না পারায় সরকারের স্বীকৃত মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেনি। পায়নি সরকারের স্বীকৃতি।

ফরিদ আহমেদ জানান, তিনি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে সুবেদার নুর আহম্মদের নেতৃত্বে ১নং সেক্টরে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী তিনি রামু থানায় যুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র (রাইফেল ও কার্টিজসহ ০৬ টি বুলেট) সমর্পন করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন ০১ নং সেক্টরের সুবেদার নুর আহমদের নেতৃত্বে তিনি রামু,উখিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার গহীন জনপদ নাইক্ষ্যংছড়ি সোনাইছড়ি,
জোয়ারিয়ানালা,সদর ফতেখাঁরকুল সহ বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র যুদ্ধে জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি সুবেদার নুর আহাম্মদের নেতৃত্বে ১ নং সেক্টরে যুদ্ধ করেছিলেন,যার যথেষ্ট ডুকমেন্ট তার রয়েছে,
রয়েছে যুদ্ধে ব্যবহার করা জেনারেল এমএজি ওসমানীর উপহার কোমরের বেল্ট।

ফরিদ আহমেদ ছেলে স্কুল শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, ছোটবেলা থেকে শুনে আসছেন তাঁর বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বাবা যে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছেন তার সকল ডকুমেন্ট বাবার রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের বাবা সাহসী ভূমিকার কথাও এলাকার সবার মুখে মুখে। তবে দূর্ভাগ্য বাবা সরকারিভাবে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিটুকু পাননি। যে কারনে বাবার সাহসী অর্জন আর ত্যাগের বিষয়টি তাদের কাছে মূল্যহীন হয়ে পড়েছে। তাঁর বাবা এখন বয়সের কারনে শারীরিকভাবে সুস্থ নন। এরপরও তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য ব্যাকুল। ছেলে হিসেবে তিনিও চান দেশমাতৃকার জন্য বাবার অসীম ত্যাগের স্বীকৃতি।

ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম জানান, আমি এই বিষয়ে অবগত নই। আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম,যদি তার প্রকৃত কাগজপত্র থাকে, তাহলে আমি আমার পরিষদীয় পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করব।

রামু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হক জানিয়েছেন, ফরিদ আহমেদ একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি ১নং সেক্টরে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলার কারনে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভূক্ত হননি।

জানা যায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করেন, জেনারেল এমএজি ওসমানী, মুক্তিযুদ্ধকালীন রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ি অঞ্চলের কমান্ডার (অবঃ) সুবেদার নুর আহমদ। তার মধ্যে রয়েছে ১৬-০৩-২০১৪ ইংরেজি তারিখে ইউনিয়ন কমান্ডার প্রদত্ত প্রত্যয়ন পত্র,০৬-০৬-২০১৪ ইং তারিখে উপজেলা কমান্ডার প্রত্যয়ন প্রদত্ত প্রত্র,১৫-০৬-২০১৪ ইংরেজি তারিখে জেলা ইউনিট কমান্ডার প্রদত্ত প্রত্যয়ন প্রত্র, ১৯৭১ সালের যুদ্ধ পরবর্তী অস্ত্র জমা দেওয়ার সময় রশিদ যার তারিখ ১৪-০২-১৯৭২,মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ে আবেদন প্রত্র যার DG নং 1147759 তারিখ ১০-০৬-২০১৪ ইংরেজি,মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রানালয় কতৃক উপজেলা যাচাই বাছাই কমিটির ২৭ নম্বরের অবস্থানের তালিকা যার তারিখ ২৮-০১-২০১৭ ইং,যুদ্ধ পরবর্তী রামু থানায় কনস্টেবল হিসাবে।
থাকাকালীন মহকুম আনসার প্রশিক্ষণ সনদ,১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের পরে জেনারেল আতাউল গণী ওসমানির প্রদত্ত এক নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা সনদ,যুদ্ধাকালীন তার ৩ জন গেজেট প্রাপ্ত বীরমুক্তিযোদ্ধার সহযোদ্ধা হিসাবে প্রদত্ত প্রত্যয়ন প্রত্র।

এত কিছু থাকার পরও কপাল খুলেনি বীরমুক্তিযোদ্বা ফরিদ আহাম্মদের। মেলেনি স্বীকৃত একজন মুক্তিযোদ্ধার।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By Bangla Webs
error: Content is protected !!