মুহাম্মদ জাকারিয়া নুর :
হামলা-মামলায় আজ আলেমসমাজও পিছিয়ে নেই। তারাও এক পক্ষ আরেক পক্ষের উপর হামলা করছে,মিথ্যা মামলাও করছে। ওয়াজের ময়দান থেকে ফেরার পথে আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। এক পক্ষ আক্রমণ করছেন,আরেক পক্ষ আক্রমণের শিকার হচ্ছেন।
অথচ প্রত্যেকেই নিজ নিজ দাবীতে সঠিক। আক্রমণকারী মনে করছেন, তিনি ইসলামের উপকার করছেন। আর আক্রান্ত ব্যক্তি মনে করছেন,তিনি ইসলামের কথা বলতে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকে আবার আক্রান্ত ব্যক্তিকে “গাজী” উপাধি দিচ্ছেন!বাহ! কি চমৎকার চেতনা! আক্রান্ত পক্ষ নিন্দা জানাচ্ছেন, আক্রমণকারী পক্ষ বিজয়ের হাসি হাসছেন! আরেক পক্ষ ( ধর্মনিরপেক্ষ নিরীহ দর্শক) শুধুই আফসোস করছে।
অথচ,দু’পক্ষই অতিরঞ্জিত করছেন। ওয়াজের স্টেজে উঠে প্রতিপক্ষের সমালোচনা করাই মনে হয় এক শ্রেণীর আলেমদের নিয়মিত রুটিন। অমুকে বাতিল! অমুকে বিভ্রান্ত! অমুক দলের আক্বীদা খারাপ! অমুকে ইহুদীর দালাল! অমুক খ্রিষ্টানদের এজেন্ট! “বিফলে মুল্য ফেরত মার্কা যৌন শক্তি বর্ধক শালষা” বিক্রেতাদের ন্যায় কথায় কথায় চ্যালেঞ্জ দেয়াই মনে হয় তাদের কাজ।
বাহাস বাহাস খেলা করা এটাও মনে হয় এক শ্রেণীর আলেমদের কাজ। না,এটা দা’ওয়াতের পদ্ধতি নয়। আপনি আপনার আদর্শ প্রচার করুন।কাউকে বিভ্রান্ত বাতিল স্বীকৃতি দেয়া আপনার কাজ নয়।আপনি যে সঠিক, তার গ্যারান্টি কি? আপনাকেও তো অন্যেরা বিভ্রান্ত মনে করে। তার সমাধান কি?
আসলে, আমাদের উদারতার যথেষ্ট অভাব। অন্যকে সম্মান দিতে আমরা জানিনা।
অন্য মতকেও সম্মান দিতে জানিনা। দিবোই বা কিভাবে? আমাদের সে শিক্ষা নেই। হয়তো আলেম হয়েছি,সার্টিফিকেট অর্জন করেছি,কিন্তু শিক্ষার আলো গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছি। হয়তো উগ্র শিক্ষকের কাছ থেকে উগ্রতা শিখেছি! উগ্র শায়েখের কাছ থেকে উগ্রতা শিখেছি! আমি ছাড়া বাকীরা বিভ্রান্ত, এ কথা আমার শায়েখ, আমার হুজুর,আমার পীর,আমার মুরুব্বি শিখিয়েছেন।
তাই, আমার মনে হয়,হক্ব ও সহীহ ডিলারশীপের এ অবস্থা চলতে থাকলে ” পারস্পরিক হত্যাকাণ্ড” ঘটে গেলেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকবেনা!