টেকনাফে ডাকাত খালেক গ্রুপের গুলিতে গুরুতর আহত এক
টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্প অধ্যূষিত হ্নীলায় ইয়াবা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ ও চালান লুটপাট এবং পূর্ব শত্রুতা নিয়ে ডাকাত খালেক গ্রুপের গোলাগুলির ঘটনায় একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। খবর পেয়ে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানায়, গত ৮ডিসেম্বর রাত সোয়া ১০টারদিকে আলী আহমদ চেয়ারম্যান ও হাশেম মেম্বারের ব্রিকফিল্ডের মধ্যবর্তী স্থানে অর্তকিতভাবে গোলাগুলির ঘটনায় লেদা লামার পাড়ার নুর আহমদের পুত্র আক্তার হোছন (৩২) গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার নেওয়া হয়। এই স্বশস্ত্র হামলার জন্য আহতেরা পরিবারের সদস্যরা ডাকাত খালেক ও ঈমান হোছন গ্রুপকে দায়ী করে। এই ঘটনার পর পরই গুলিবিদ্ধ আক্তার হোছনের স্বজনেরা মোঃ ছিদ্দিকের নেতৃত্বে জড়ো হয়ে ধাওয়া করলে খালেক গ্রুপ গুলিবর্ষণ করে পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়। এই ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ-বিজিবির পৃথক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
গুলিবিদ্ধ আক্তার বলেন, প্রায় দুই মাস পূর্বে আমার ভাগিনী জামাই জালাল উদ্দিন হতে এক লক্ষ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায় খালেক গং। সালিশের মাধ্যমে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু এখনো পরিশোধ করেনি
কিন্তু গতরাতে রোহিঙ্গার দোকান হতে পান-সিগারেট খেয়ে ফেরার পথে জাফর মার্কেটের পশ্চিমে এলে অর্তকিতভাবে ডাকাত খালেকের নির্দেশে তার ভাগিনা আবুল হাশেমের পুত্র রাসেল প্রকাশ আব্বুইয়া আমাকে গুলি করে। তখন আমার চাচাত ভাই নুরুল ইসলামের পুত্র ঈমান হোছন আমাকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসে। বিষয়টি প্রতিবেশীকে জানালে তারা দলবদ্ধভাবে এসে আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এই ব্যাপারে অভিযুক্ত খালেক গ্রুপের খালেক জানান, এই কাজে আমি জড়িত নয়। আমাকে শত্রুতামূলক জড়ানো হচ্ছে।
এই ব্যাপারে মোঃ ছিদ্দিক বলেন,গুলিবিদ্ধ আক্তার হোছন মুঠোফোনে আমাদের সহায়তার জন্য ডাকলে আমরা স্বদলে গুলিবিদ্ধ আক্তারকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করি। আমি কোন ধরনের খারাপ কাজে জড়িত নয়। বর্তমানে ডাকাত খালেক ও তার গ্রুপের সদস্য গোরা পুতিয়া, আবুল হাশেমের পুত্র রাসেল প্রকাশ আব্বুইয়া, মকতুল হোছনের পুত্র ঈমান হোছন,আক্তার হোছন, আবুল খাইরের পুত্র মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ নুরের পুত্র ছৈয়দ নুর, মালয়েশিয়া প্রবাসী জোবাইরসহ ১৫/২০জন রোহিঙ্গা নিয়ে স্বশস্ত্র গ্রুপ গঠন করে ইয়াবার চালান খালাস, লোকজন অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে। কথায় কথায় ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করছে। যা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ এলাকাবাসী অবহিত রয়েছে।
এই ব্যাপারে স্থানীয় মহিলা মেম্বার মর্জিনা আক্তার বলেন,দু’পক্ষের গোলাগুলিতে উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে নয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি ও স্থানীয় বিজিবিকে অবহিত করার পর ঘটনাস্থলে এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এই জন্য আইন-শৃংখলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি অন্যথায় কয়েকজন লাশ হয়ে পড়ে থাকত। চিহ্নিত স্বশস্ত্র অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা দরকার।
এই ব্যাপারে নয়াপাড়া এপিবিএন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফয়জুল আজিম বলেন, আমরা ডাকাত খালেক ও ছিদ্দিক গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার বিষয়টি থাকাকে অবহিত করার পর আমরা চলে আসি।
স্থানীয় সচেতন মহলের দাবী,মাদক কারবার,গোলাগুলিতে এলাকাটি বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দু’পক্ষই স্বার্থের জন্য পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা করছে। তাই তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে এলাকায় শান্তি-শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।